Header Ads

বিষাদ সিন্ধু। বিষাদ সিন্ধু উপন্যাসের নায়ক কে

মীর মুশারফ হোসেন রচিত একটি মহাকাব্যিক উপন্যাস বিষাদ সিন্ধু। বিষাদ সিন্ধু ইতিহাস আশ্রিত একটি উপন্যাস। বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় ও প্রাচীনতম উপন্যাস গুলুর মধ্যে এটি অন্যতম একটি উপন্যাস।

বিষাদ সিন্ধু অর্থ কি

বিষাদ শব্দের অর্থ দুঃখ এবং সিন্দু অর্থ সাগর।  অর্থাৎ বিষাদচ্ছিন্দু অর্থ দুঃখের সাগর।  কাহিনীর শুরু বিষাদের ছায়া দিয়ে আবার সমাপ্তি হয়েছে বিষাদের ছায়া দিয়েই।  তাই এটি বিষাদ সিন্ধু নামে অভিহিত করা হয়েছে। আরব দেশের সপ্তম শতাব্দীর ঘটনাবলী এবং ইমাম হাসান হোসেনের করুন কাহিনী এই উপন্যাসে বর্ণিত হয়েছে।  হিজরী ৬৬১ সালের সংঘটিত কারবালার যুদ্ধ ও এর পূর্বাপার ঘটনাবলী এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য বিষয়। উপন্যাসটি প্রথমে তিন ভাগে প্রকাশিত হয়। ১৮৮৫, ১৮৮৭, ১৮৯০ সালে। পরবর্তীতে সবগুলো এক খন্ডে মুদ্রিত হয়।

বিষাদ সিন্ধু উপন্যাসের নায়ক কে

বিষাদ সিন্ধু উপন্যাসের নায়কের নাম ইমাম হোসেন।  তবে ইসলামিক ভাবে নায়ক ইমাম হোসেন। কিন্তু সাহিত্যিক বিচারে এজেদয়ই নায়ক। হাসান ও হোসেনের সাথে দামেস্কের অধিপতি মুয়াবিয়ার একমাত্র পুত্র ইয়াজিদের কারবালার প্রান্তরে রক্তক্ষয় যুদ্ধ এবং ইমাম হাসান হোসেনের করুন কাহিনী এই উপন্যাসের মূল বিষয়। মূল চরিত্রে হাসান ইবনে আলী হোসাইন এর বড় ভাই, মোহাম্মদ (সঃ) এর দৌহিত্র, চতুর্থ খলিফা আলী ইবনে আবু তালিব ও নবী কন্যা ফাতেমার পুত্র।  মুয়াবিয়ার পুত্র হাসান হোসেনের প্রতিপক্ষ।

বিষাদ সিন্ধু উপন্যাসের সারমর্ম

বাংলা সাহিত্যে বিশেষ স্থান দখল করে আছেন মীর মোশারফ হোসেন তার বিখ্যাত উপন্যাস সিন্দুর কারণে।  উপন্যাসটিতে তার নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও উপন্যাসটির ঘটনাবলী তাকে সচেতন শিল্পী মনের পরিচয় বহন করে।  ইমাম হাসান হোসেনকে হত্যা এবং ঐতিহাসিক ঘটনার পাশাপাশি উপকাহিনী অনৈতিহাসিক ও লেখকের স্বকল্পিত চরিত্র এবং অতিপ্রাকৃত ঘটনার সংমিশ্রণে উপন্যাসটি হয়ে উঠেছে ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস। উপন্যাসটিতে বিভিন্ন বিষয় বৈচিত্র চরিত্রের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণে কথক গভীর জীবন বোধের পরিচয় তুলে ধরেছেন। ইতিহাস ও ধর্মীয় আবেগ উপন্যাসটিতে প্রেরণা সৃষ্টি করলেও আধুনিক শিল্পীর সুনিপুণ শিল্পকর্ম, ভাষা, কাহিনী, বিষয়, গৌরব সংলাপ ও চরিত্র চিত্রনে জীবনবোধের অনন্য শিল্পকর্ম হয়ে উঠেছে। আলোচিত উপন্যাসের ঘটনাংশ আদি মধ্যযুগ সমগ্র ও সরল প্লটের রৈখিক। বিন্যাস রীতি  প্রচলিত উপন্যাসের ধারানুবর্তী সর্বমোট তিনটি পর্বে বিন্যস্ত এ উপন্যাসের কাহিনী। উপন্যাসের কাহিনী কারবালার বিষাদময় ঐতিহাসিক ঘটনাবলম্বনে গড়ে উঠলেও জয়নবের প্রতি এজিদের রুপ তৃষ্টা,  প্রাণাসক্তি ব্যর্থতা এবং তার পরিণাময়ই মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। তিন পর্বে বিভক্ত বিষাদ সিন্ধুর মহরম পর্বে বর্ণিত হয়েছে, দামেস্কের অধিপতি মাবেয়ার পুত্র এজিদের প্রণয় আসক্তি ব্যর্থতা এবং তার পরিণাম। উদ্ধার পর্বে বর্ণিত হয়েছে বিপন্ন ঈমান হোসেন পরিবারের অস্তিত্ব রক্ষা এবং প্রদানন্দ দুর্জয় বীর হানিফার প্রতিশোধ গ্রহণের বিবরণ। এজিদ বদ পড়বে হানিফার এজিদ হত্যার প্রচেষ্টা এজিদের ভূগর্ভস্থ গুপ্ত কক্ষের পলায়ন এবং জলন্ত অগ্নিকুণ্ডে নারকীয় কষ্ট ভোগ দৈব পানিতে বহু প্রাণ ক্ষয়কারী হানিফার প্রাকৃতিক বন্দিত্ব এবং হুসেন বংশধর জয়নাল আবেদীনের রাজ্য লাভের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।  এবং সব শেষে লেখক সত্যের জয় ও পাপের পরিণাম ফল ভোগের অবশ্যম্ভাবিতার  কথাটি স্মরণ করিয়েছেন।

কোন মন্তব্য নেই

RBFried থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.